শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

বাংলাদেশ : মল্লযুদ্ধের রঙ্গমঞ্চ- ১


বাংলাদেশ : মল্লযুদ্ধের রঙ্গমঞ্চ-

আবুল হোসেন খোকন

[২৫ এপ্রিল ২০২৫/ বাংলাদেশ : মল্লযুদ্ধের রঙ্গমঞ্চ]

এশিয়া অঞ্চল নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাথা ব্যাথা দীর্ঘ দিনের। এখানে অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারই মূখ্য। এরজন্য প্রয়োজন পেশী বা সামরিক শক্তিরও। এই দুই আধিপত্যর জন্য দরকার ছিল রাজনৈতিক কূটনীতি, যা তারা আঞ্চলিকভাবে প্রয়োগ করে আসছিল। এরজন্য জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়ার মত দেশগুলোতে সামরিক ঘাঁটি বা অবস্থান রয়ে গেছে। চীনের পাশে তাইওয়ানকেও এজন্য প্রয়োজন। প্রয়োজন পাকিস্তানের মত দেশকেও। কারণ মার্কিন একাধিপত্যের প্রধান বাধা চীন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া। এই বাধা মোকাবিলায় জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল এমন একটা জায়গা, যেখান থেকে বাধার বিরুদ্ধে লড়াই করা অনেকটাই সহজসাধ্য হয়ে ওঠে। আর সেই জায়গাটিই বাংলাদেশ।

ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কিছুতেই বাগে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ এখানে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে ক্ষমতায় ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। এই সরকার বা সরকার প্রধান শেখ হাসিনা কিছুতেই মাথানত করেনি। বরং তারা মার্কিন পরাশক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমন একটা অবস্থান নিয়ে চলছিল- যাতে বাংলাদেশ কোনভাবেই কোন পরাশক্তির ক্রিড়নক না হয়ে দ্রুত উন্নয়নের পথে ধাবিত হচ্ছিল। ভারত, চীন, রাশিয়াসহ আঞ্চলিক পর্যায়গুলোকে ম্যানেজ করে নিজ দেশের উত্থান ঘটিয়ে চলছিল। এক কথায় বাংলাদেশকে কারও কোন রঙ্গমঞ্চ বানানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি।

যদিও এই ভাল দিকটার ভেতর বেশ কিছু খারাপ দিকও স্থান করে নিয়েছিল। যার ফলে স্বৈরতান্ত্রিক তকমা জুটেছে এবং দলীয় নেতৃত্বের একাংশ দুর্নীতি করতে দ্বিধা করেনি। তবে স্বৈরতান্ত্রিক পথে হলেও বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এগিয়ে চলছিল। আবার ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞের সঙ্গে দুর্নীতিও এগুচ্ছিল। আধিপত্যবাদী পরাশক্তির জন্য এটাই হয়ে উঠেছিল বড় হাতিয়ার। তাছাড়া, একটি ছোট্ট দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এতো উন্নয়ন, এতো উত্থান- তাদেরসহ আরও অনেকের জন্য কাম্য ছিল না। তার বদলে ছিল ভয়ঙ্কর ঈর্ষা প্রতিহিংসা। বিশেষ করে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মানুষ মার্কিন পরাশক্তিকে লজ্জাস্করভাবে পরাজিত করেছিল, যা তারা কখনই ভুলতে পারেনি। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এর প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি ছিল অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের স্বার্থে নিরাপদ অবস্থান তৈরির ব্যবস্থা পাকা করা। তাই, হাতিয়ার করা হয় শেখ হাসিনা সরকারের বেশকিছু ব্যর্থতা, দুর্নীতি এবং খোঁজা হয় দেশের ভিতর সরকারের প্রতিপক্ষ শক্তিকে। এই প্রতিপক্ষ ছিল একাত্তর এবং পঁচাত্তরের ঘাতক-দালাল চক্র। এমন বাস্তবতায় শেখ হাসিনার প্রতি ক্রুদ্ধ-ক্ষুব্ধ জো বাইডেন প্রশাসন হাতে নেয়ম্যাটিকুলাসপ্রকল্প বা পরিকল্পনা।

আগেই বলেছি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিপক্ষ ছিল রাজনৈতিকভাবে একাত্তর পঁচাত্তরের ঘাতক-দালাল চক্র। ছিল সুবিধাবদী অর্থলোভী সামরিক-বেসামরিক বহু ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান। এমনকি রাজনৈতিক দল বা দলীয় নেতৃত্বও- যাদেরকে মোটা টাকা দিয়ে কেনা যায় এবং তাদেরকে দিয়ে যা খুশি তাই- করানো যায়। বিষয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মুখ ফসকে বলেই ফেলেছেন- বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার পতনে জো বাইডেন প্রশাসনের ২৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার কথা। আদতে এরকম কতো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার যে একাত্তর-পঁচাত্তরের ঘাতক-দালাল চক্র, অর্থলোভী সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তি, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান, এনজিওর পেছনে ব্যয় করা হয়েছে- তা অনুমান করতে কারও কষ্ট হয় না। এমনকি যারা লাল পতাকার দল, তারাও বাদ যায়নি। কারণ তাদের জন্য তো এখন রাশিয়া-চীন নেই, ফলে তাদেরকে ভিক্ষে করে চলতে হয়। আর ভিক্ষুকের যেমন ভিক্ষায় কোন নীতি-আদর্শ থাকেনা, এদেরও তেমন থাকেনি। ফলে এরাও উচ্ছিষ্ট যা পেয়েছে তাতেই মহাসন্তুষ্ট থেকে সায় মিলিয়েছে এই ম্যাটিক্যুলাস পরিকল্পনায়।

সুতরাং সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তির পোয়াবারো অবস্থা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্তমেধাবীনামধারী মোবাইল দেখা মেধাহীন প্রজন্মকে কাজে লাগিয়ে, স্বার্থলোভী সামরিক-বেসামরিক গোষ্ঠী-ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এবং একাত্তর-পঁচাত্তরের ঘাতক-দালাল মৌলবাদী জঙ্গিদের নামিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। শেখ হাসিনাকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসানো হয় তাদের পদলেহনকারী অপশক্তিকে। তবে এই শক্তির অবস্থা এমন রাখা হয়- যেটি অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক এবং অনির্বাচিত। তথাকথিত এমন একটি সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে স্বার্থ হাসিলের ষোলকলা পূর্ণ করা হয়।

এমন কান্ডের ফলাফল যা হবার তাই- হয়েছে। গৌরবের বাংলাদেশ এখন স্বাধীনতা হারিয়ে পরাধীন। বাংলাদেশে এখন কারও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। দেশ চলছে মগের মুলুকের মত। আর সুযোগ বুঝে কখনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চলে আসছে মার্কিন, পাকিস্তানের বাঘা বাঘা সামরিক নেতা এবং গোয়েন্দারা। তারা এই পবিত্র মাটিতে তাদের নোংরা খেলার ময়দান গড়ে তুলছে। আর এমন ঘটনায় ভারত, চীন, রাশিয়া বসে থাকবে কেন? তারাও এই মাটি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। যা আগে কখনও ছিল না। এমনকি এমন লন্ডভন্ড অবস্থায় প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমারের বিদ্রোহী গেরিলা আরাকান আর্মিরা পর্যন্ত বান্দরবানে বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পড়ে, পতাকা উড়িয়ে উৎসব করছে। বাজারে কথা আছে, এরইমধ্যে তারা নাকি বাংলাদেশের অনেকখানি দখল করেও নিয়েছে। কথা আছে, ওইসব অঞ্চল নিয়ে ভিন্ন রাষ্ট্র গড়ার ছক কষা হচ্ছে। হাতছাড়া করে দেওয়া হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম, সেন্টমার্টিনসহ নানা জায়গা। এসব ক্ষেত্রে মেরুদ-হীন পুতুল সরকারের যেমন করার কিছু নেই, এইসঙ্গে করার কিছু নেই দায়িত্বে থাকা অন্য কারোর-ই। কারণ এখন এখানে সবাই মেরুদন্ডহীন তাদের কোন ক্ষমতা নেই, সাহস নেই। পরাধীন দেশে যা হবার- তাই- হয়েছে। সেই কারণে বাংলাদেশ এখন নানা পরাশক্তির মল্লযুদ্ধের রঙ্গমঞ্চ হয়ে উঠেছে। [চলবে]


শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশে রাজনীতির দাবা খেলা.. (Politics in Bangladesh Chess Game..)




বাংলাদেশে রাজনীতির দাবা খেলা.. (Politics in Bangladesh Chess Game..) : বাংলাদেশে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি নিয়ে খন্ডচিত্রভিত্তিক একটি প্রতিবেদন। Politics in Bangladesh Chess Game.. (বাংলাদেশে রাজনীতির দাবা খেলা.. ) : A fragment image based report on the uncomfortable situation in Bangladesh.

শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫

Bangladesh and the bag cat (৫ আগস্ট ও থলের বিড়াল)


 

Bangladesh and the bag cat ( আগস্ট থলের বিড়াল)

 

৫ আগস্ট ও থলের বিড়াল (Bangladesh and the bag cat): ৫ আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটানো হয়েছে। ক্ষমতা দখল করেছে কথিত বিপ্লবীরা। এরইমধ্যে সেই ক্ষমতা পরিচালনার পাঁচ মাস পার হতে চলেছে। এই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সেই পাঁচ মাসের কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, যার ভেতর দিয়ে কথিত বিপ্লবীদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা পাওয়া যাবে। 

August 5 of Bangladesh and the bag cat (৫ আগস্ট ও থলের বিড়াল): On 5 August 2024, Sheikh Hasina's government was overthrown in Bangladesh. The so-called revolutionaries have seized power. In the meantime, five months of the administration of that power are about to pass. Through this documentary film, some of the facts of those five months have been highlighted, through which a general idea of the aims and objectives of the so-called revolutionaries can be obtained.