-আবুল হোসেন খোকন
স্বপরিবারে ভারত ভ্রমণে গিয়েছিলাম গেল মাসে। দিনটি ছিল জুলাই মাসের ৫ তারিখ
শনিবার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে ছিল যাত্রা পর্ব। শুভাকাক্সিক্ষদের অনেকেই বলেছিলেন, বাংলাদেশ বিমানে যাবেন না। নানান ঝক্কি-ঝামেলার মুখোমুখী
হতে হবে। তার বদলে বিদেশি বিমানে যান, ঝামেলা হবে না। সেইমত টিকেট কেটেছিলাম জেট এয়ারে। শুভাকাক্সিক্ষদের কথা ঠিক, যথাসময়ে এয়ারপোর্টে গিয়ে ওদের কাউন্টারের টিকেট দেখাতেই লাগেজ
নিয়ে নিলো এবং এয়ারের বোর্ডিং পাস দিয়ে দিলো। আমাদের লাগেজে শেভিং রেজার, ব্লেড, ছুরি, কাঁচি থেকে ব্যবহারিক সব কিছুই
ছিল। এসব নিয়ে কোন ঝামেলা হলো না। স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে সব কিছু
বিমানে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু যতো গণ্ডগোল দেখলাম বাংলাদেশি ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে। লাইনে দাঁড়ানোর পর দেহ এবং
হাতব্যাগ তল্লাশীর সময় দেখলাম অনেকের অনেককিছু রেখে দেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যে রেজার বক্স, কাঁচি, ব্লেড ইত্যাদিও রয়েছে। ভাগ্যিস ওগুলো লাগেজে পাঠিয়েছিলাম। নইলে হয়তো আমাদের এসব জিনিসপত্রও
খুঁইয়ে যেতে হতো।
আমাদের ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে নারী-পুরুষের দেহ এবং ব্যাগ তল্লাসীতে যে কাণ্ড দেখলাম কলকাতা নেতাজী সুভাস চন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসবের কোন বালাই নেই। যান্ত্রিক স্ক্যানিং মেশিনের ভেতর দিয়ে যেতে হলো, তারপর সব শেষ। শুধু আমার পাসপোর্টে পেশা হিসেবে ‘জার্নালিস্ট’ লেখা আছে বলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে এক মিনিট সময় চাইলেন। তারপর পাসপোর্টটির কটি পাতা ফটোকপি করে ফেরত দিয়ে দিলেন। , ঈশ্বরদীসহ কয়েক স্থানে মৈত্রী ট্রেনে অভিযান চালিয়ে ভারত ফেরত যাত্রীদের তাবৎ লাগেজসহ লক্ষ লক্ষ টাকার বৈধ মালামাল গণহারে কেড়ে নিয়ে যায় বর্ডার গার্ড টিম।
যারা ওয়াকেবহাল তারা কিন্তু জানেন, ব্যাগেজ রুল বলে একটি আইন আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অর্থ বিল ২০১৩-এর মাধ্যমে শিথিল করা রুল অনুযায়ী, স্থল পথের যাত্রীরা ৪০০ ডলার পর্যন্ত মূল্যমাণের মালামাল বিনা শূল্কে নিয়ে আসতে পারবেন। এই রুল অনুযায়ী, সব পথের যাত্রীরা বিনা শূল্কে ২২ ইঞ্চি প্লাজমা, এলসিডি ও এলইডি টিভি বিনা শূল্কে সঙ্গে আনতে পারবেন। সুতরাং ৪০০ ডলার মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩২ হাজার টাকার বৈধ মালামাল বিনা শূল্কে নিয়ে আসতে পারবেন। এখানে এই জামা এতোটা কেন, এই কাপড় এতো কেন, শাল কেন, কসমেটিকস কেনÑ এসব বলার কোন সুযোগ নেই। আর মালামার বৈধ কি অবৈধÑ তা দেখার জন্য এই ডিজিটাল যুগে ব্যাগ খুলে খুলে হাতড়ে হাতড়ে দেখারও প্রয়োজন নেই। স্ক্যানিং মেশিনে ঢোকালেই ব্যাগ বা লাগেজে কি জিনিস আছে, কতোটা আছেÑ তা দেখা যায়। আর এসব মানুষকে দেখতে হয় না, কম্পিউটারই দেখে দেয়।
এই বাস্তবতায় আমাদের দেশের ইমিগ্রেশন, কাস্টমস বা চেক পয়েন্টগুলোতে যা চলছেÑ তা রীতিমতো আইনবিরোধী, জনবিরোধী এবং ভ্রমণবিরোধী। এতেকরে শুধু ভ্রমণকারীরা যে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তা নয়, দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে এইসব পয়েন্টের ডাকাত-ছিনতাইকারীদের কঠোর হস্তে নির্মূল করতে হবে। এটা করা জরুরি।
আবুল হোসেন খোকন : সাংবাদিক ও লেখক
আমাদের ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে নারী-পুরুষের দেহ এবং ব্যাগ তল্লাসীতে যে কাণ্ড দেখলাম কলকাতা নেতাজী সুভাস চন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসবের কোন বালাই নেই। যান্ত্রিক স্ক্যানিং মেশিনের ভেতর দিয়ে যেতে হলো, তারপর সব শেষ। শুধু আমার পাসপোর্টে পেশা হিসেবে ‘জার্নালিস্ট’ লেখা আছে বলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে এক মিনিট সময় চাইলেন। তারপর পাসপোর্টটির কটি পাতা ফটোকপি করে ফেরত দিয়ে দিলেন। , ঈশ্বরদীসহ কয়েক স্থানে মৈত্রী ট্রেনে অভিযান চালিয়ে ভারত ফেরত যাত্রীদের তাবৎ লাগেজসহ লক্ষ লক্ষ টাকার বৈধ মালামাল গণহারে কেড়ে নিয়ে যায় বর্ডার গার্ড টিম।
যারা ওয়াকেবহাল তারা কিন্তু জানেন, ব্যাগেজ রুল বলে একটি আইন আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অর্থ বিল ২০১৩-এর মাধ্যমে শিথিল করা রুল অনুযায়ী, স্থল পথের যাত্রীরা ৪০০ ডলার পর্যন্ত মূল্যমাণের মালামাল বিনা শূল্কে নিয়ে আসতে পারবেন। এই রুল অনুযায়ী, সব পথের যাত্রীরা বিনা শূল্কে ২২ ইঞ্চি প্লাজমা, এলসিডি ও এলইডি টিভি বিনা শূল্কে সঙ্গে আনতে পারবেন। সুতরাং ৪০০ ডলার মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩২ হাজার টাকার বৈধ মালামাল বিনা শূল্কে নিয়ে আসতে পারবেন। এখানে এই জামা এতোটা কেন, এই কাপড় এতো কেন, শাল কেন, কসমেটিকস কেনÑ এসব বলার কোন সুযোগ নেই। আর মালামার বৈধ কি অবৈধÑ তা দেখার জন্য এই ডিজিটাল যুগে ব্যাগ খুলে খুলে হাতড়ে হাতড়ে দেখারও প্রয়োজন নেই। স্ক্যানিং মেশিনে ঢোকালেই ব্যাগ বা লাগেজে কি জিনিস আছে, কতোটা আছেÑ তা দেখা যায়। আর এসব মানুষকে দেখতে হয় না, কম্পিউটারই দেখে দেয়।
এই বাস্তবতায় আমাদের দেশের ইমিগ্রেশন, কাস্টমস বা চেক পয়েন্টগুলোতে যা চলছেÑ তা রীতিমতো আইনবিরোধী, জনবিরোধী এবং ভ্রমণবিরোধী। এতেকরে শুধু ভ্রমণকারীরা যে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তা নয়, দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে এইসব পয়েন্টের ডাকাত-ছিনতাইকারীদের কঠোর হস্তে নির্মূল করতে হবে। এটা করা জরুরি।
আবুল হোসেন খোকন : সাংবাদিক ও লেখক